মোঃনাজমুল হোসেন শ্রীপুর থেকেঃ
মোসাদ্দেক, গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভা ৩ নং ওয়ার্ড লোহাগাছ পূর্বপাড়া গ্রামের একজন সহায় সম্বলহীন, ভিটেমাটি ছাড়া সহজ সরল সাধারন কৃষক মো: ফাইজুদ্দীন খানের সন্তান।
যেখানে জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো মিটিয়ে বেচে থাকার যুদ্ধেই যার হামাগুড়ি খেতে হয় , সেখানে লেখাপড়া করিয়ে সন্তান মোসাদ্দেককে শিক্ষিত বানানোর প্রয়াস যেনো এক রূপকথার গল্প।
কিন্তু সেই রূপকথার গল্প যখন বাস্তবেই রূপ ধারন করে, তখন স্বপ্নহীন এক কৃষক পরিবারে আশার আলো হয়ে জলে উঠা এক স্বপ্নপ্রদীপেরর নাম হলো মোসাদ্দেক। অর্থের যোগান নেই, লেখাপড়ার খরচ নেই, তবুও অধম্য এক ইচ্ছায় নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তনের যুদ্ধে মোসাদ্দেক টিউশনী করে করে নিজের লেখাপড়াটাকে চালিয়ে নেয়।
প্রাইমারীতে বৃত্তি পেয়ে শুরু হয় তার স্বপ্নযাত্রা। জেএসসিতে পায় টেলেন্টপুলে বৃত্তি। তারপর এস এস সি তে গোল্ডেন এ প্লাস। পরের ধাপ এইচ এস সি, এখানে শুধু গোল্ডেন এ প্লাস ই নয়, বরং ঢাকা বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে মেধা তালিকায় সে অষ্টম স্থান অর্জন করে। একজন কৃষক বাবা মায়ের কাছে সন্তানের এই সফলতাগুলো শুধুই সফলতাই নয়, সন্দেহহীন আশার আলো নিশ্চয়.! সে আশার আলো আরো জলে উঠে, যখন হাজার হাজার মেধাবীকে পেছনে ফেলে মোসাদ্দেক যখন সরকারী মেডিকেলে চান্স পায়।
কিন্তু এইবার আর টিউশনীর উপার্জিত টাকায় মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার খরচ যোগার করা আর তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবুও থেমে থাকেনি সে। টাকার অভাবে মেডিকেলে ভর্তি হতে না পেরে পরীক্ষা দিলো ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে। সেখানেও হয়ে গেলো চান্স।
বর্তমানে মোসাদ্দেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। কিন্তু জীবনের এ পর্যায়ে এসে মোসাদ্দেক আজ জীবনযুদ্ধে হার মেনে যাওয়া এক পরাজিত সৈনিক। ডাক্তার বলেছে, একটা ক্রিটিক্যাল প্রবলেম হয়েছে মোসাদ্দেকের দেহের ভিতর। যার দরুন তার লান্স (ফুসফুস) প্রায় সেভেনটি আপ ডেমেজ হয়ে গেছে।
ইতিমধ্যে তার শারীরীক অবস্থার ব্যপক অবনতিতে মোসাদ্দেকের অসহায় বাবা মা প্রায় দিশেহারা। নিজের চোখে এমন সূর্য সন্তানের শারীর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার এমন করুন দৃশ্য নিশ্চয় কোন মা বাবাই দেখতে পারে না, দেখতে চায় না।
একজন অপারগ ও হতদরিদ্র মা বাবা যখন অর্থাভাবে নিজের মৃত্যুপথযাত্রী সন্তানের তীব্র কষ্ট হচ্ছে জেনেও চিকিৎসা করাতে না পারে, তখন সে মাতৃহৃদয় কি যন্ত্রনার অনুভূতিতে ছটফট করে, তা সে মা বাবাই জানে। সমাজে কত বিত্তবান, সমাজহিতৈষী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্ধ,পরোপোকারী, সেবামুলক প্রতিষ্ঠান, সরকারী সাহায্য, সেচ্ছাসেবী ডুনার কিংবা সাংবাদিকগণ কারো না কারো ইকটু সহযোগীতার নজর যদি এই অসুস্থ মেধাবী মোসাদ্দেকের উপর পরতো, তাহলে হয়তো আপনাদের সহযোগীতায় আল্লাহ চায়তো মোসাদ্দেক আবার সুস্থ হয়ে তার মা বাবার বুকে স্বপ্ন ও আশার আলো হয়ে বেচে থাকতো।
মোসাদ্দেকের অপারেশন করাতে চিকিৎসার ব্যয় লাগে আনুমানিক ৮ লক্ষ টাকার মত। যদি কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি মোসাদ্দেকের চিকিৎসার জন্য দয়া করে একটু এগিয়ে আসতেন, হয়তো মোসাদ্দেক ফিরে পেতো তার সুস্থ জীবন।
মোসাদ্দেক : 01762382562.