হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দেবপাড়া বাজার থেকে বিপুলপরিমাণ অতিথি পাখিসহ ৫ পাখি শিকারিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় র্যাব ৯ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কম্পানি ২ এর ভারপ্রাপ্ত কম্পানি কমান্ডার ও শ্রীমঙ্গল ক্যাম্প কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান এর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো নবীগঞ্জ উপজেলার বুড়ি নাও গ্রামের আনোয়ার মিয়ার ছেলে আয়াত মিয়া, উত্তর দেবপাড়া গ্রামের আব্দুল মালিক এর ছেলে নুর উদ্দিন, পূব দেবপাড়া গ্রামের আছিম উল্লার ছেলে দেলোয়ার হোসেন, সামছু মিয়ার ছেলে রিফাত আহমেদ ও মৃত মোস্তফা মিয়ার ছেলে ছায়েদ মিয়া।
এএসপি কামরুজ্জামান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ৫ শিকারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় বক, বালি হাঁস, ওয়াকসহ বিপুলপরিমাণ অতিথি পাখি উদ্ধার করা হয়। এগুলো বন বিভাগের মাধ্যমে অবমুক্ত করা হবে।
তিনি আরো জানান, পাখি শিকারিরা হাওর থেকে এ সকল অতিথি পাখি শিকার করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নিয়ে আসে। তারপর বিভিন্ন গাড়ি থামিয়ে ক্রেতারা এই পাখি কিনে নিয়ে যায়। হাওর এলাকায় অনেক শিকারি এ কাজে জড়িত আছে বলে আটককৃতরা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
প্রসঙ্গত, হবিগঞ্জে অবাধে চলে আসছে পাখি শিকার। হবিগঞ্জের সদর, শায়েস্তাগঞ্জ, বাহুবল, বানিয়াচং, নবীগঞ্জ ও মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন জলাশয় এবং হাওরে শিকারিরা এ সকল পাখি শিকার করে প্রকাশ্যে বিক্রি করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। হাওরে জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে বক, শালিকসহ বিভিন্ন ধরনের অতিথি পাখি শিকার করে শিকারিরা। বিভিন্ন ব্যক্তির আগাম টাকা নিয়ে পাখি সরবরাহ করে থাকে ওই চক্র। প্রতিদিন বিপুলপরিমাণ পাখি বিক্রি করে তারা। পাখি শিকার এবং বিক্রিকে স্বাভাবিক ব্যাপার বলে মনে করে তারা। একটি বক পাখি ১ শ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পাখি শিকার আইনত অপরাধ, কিন্তু মানছে না শিকারিরা। পাখি শিকার করে বিক্রি করছেন, টাকা কামাচ্ছেন। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। এদিকে এই মৌসুমে স্থানীয় পাখি শিকার বেশি হলেও শীতের সময় হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় বক ও পেরি হাঁস, শালিকসহ নানান জাতের অতিথি পাখি শিকার করে তারা।