মোঃ রমজান আলী রুবেল ও নাজমুল ইসলাম ঃ
গাজীপুরের শ্রীপুরে মুখ থুবরে পড়ছে সরকারি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো। চিকিৎসক সংকটের অজুহাতে বেশীর ভাগ সময়ই চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো থাকে বন্ধ। সন্ধ্যা হলেই চিকিৎসা কেন্দ্রের ভেতর জমে উঠে মাদকসেবীদের আড্ডা।
নানাবিধ অবহেলায় প্রান্তিক মানুষের জন্য গড়ে তোলা এসব সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রের সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়া তথ্য মতে, প্রান্তিক মানুষের চিকিৎসা দেয়ার লক্ষ্যে সরকার এই উপজেলায় পাঁচটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও চারটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলে। প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন করে মেডিকেল অফিসার, মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট, ফার্মাসিস্ট, মিডওয়াইফ ও অফিস সহায়কের পদ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসক যোগদান না করায় মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে এই চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো খোলা রাখার সরকারি বিধান থাকলেও অধিকাংশ সময়ই তা বন্ধ রাখা হয়। তবে সবচেয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়েছে কাওরাইদ ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। যেখানে তা চালু রাখার মত জনবল পাওয়া যাচ্ছে না। আর এ সুযোগে এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিণত হয়েছে মাদকসেবীসহ অপরাধীদের আড্ডাখানায়। সোমবার কাওরাইদ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, এই চিকিৎসা কেন্দ্রটি বন্ধ। তখন কাওরাইদ এলাকার মাসুম মিয়া খিচুনীরত তার ছেলে ইয়াসিন (৮) কে নিয়ে আসেন কেন্দ্রটিতে। কিন্তু তা বন্ধ থাকায় ছেলেকে নিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন তিনি। স্থানীয়রা জানান, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি কয়েক বছর ধরেই বন্ধ হয়ে আছে। প্রতিদিনই অনেক রোগী আসেন সেবা নিতে। কিন্তু তা বন্ধ থাকায় আশাহত হয়ে ফিরে যান তারা।
বন্ধ থাকার সুযোগে সন্ধ্যার পর চিকিৎসা কেন্দ্রটির ভেতরে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। আর চিকিৎসা কেন্দ্রের ভেতরই চিকিৎসা দেয়ার কক্ষগুলোকে স্থানীয়রা গবাদি পশুর গোয়ালঘরে পরিণত করেছেন। বেলদিয়া গ্রামের খোদেজা বেগম জানান, গত পাঁচ বছরের একদিনও এই কেন্দ্রটিতে চিকিৎসা দেয়া হয়নি। মাঝে মধ্যে একজন লোক আসে আবার কিছুক্ষণ পর চলে যায়। কাওরাইদ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অফিস সহায়ক আনিছুর রহমান জানান, এখানের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক প্রেষণে অন্য স্থানে চলে গেছেন। বাকিরাও আসেনা। চিকিৎসা দেয়ার মত এখানে আর কেউ নেই।