রোহিঙ্গা সংকটের মোকাবেলায় খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, পয়ঃনিষ্কাশন ও যৌন সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিং এ সহযোগিতা করতে যুক্তরাজ্য আরো অতিরিক্ত অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের দাতাসংস্থা ইউকে এইড এর মন্ত্রী মিস ব্যারোনেস সাগ গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরে এসে অতিরিক্ত ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তার ঘোষণা দেন। যুক্তরাজ্যের এই ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা তার সম্প্রতি ঘোষিত ৮৭ মিলিয়ন পাউন্ড প্রতিশ্রুতির সাথে যুক্ত হলো। ২০১৭ সাল থেকে এই পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় যুক্তরাজ্যের মোট সহায়তার পরিমান দাঁড়ালো ২৫৬ মিলিয়ন পাউন্ডে।
এর পাশাপাশি, মিস ব্যারোনেস সাগ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় কক্সবাজারে কর্মরত মানবিক সহায়তা প্রদানকারী কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
যুক্তরাজ্যের দাতাসংস্থা ইউকে এইড এর মন্ত্রী মিস ব্যারোনেস সাগ বলেন, রোহিঙ্গারা যে সংকটের মুখোমুখি হয়েছে তার পরিসর অনেক বড়। আমার এই সফরে আমি সরাসরি দেখেছি কিভাবে ইউকে এইড কক্সবাজারে মানুষের জন্য খাদ্য, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন নিশ্চিত করে সত্যিকার অর্থেই পরিবর্তন আনছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার সহিংসতা ও মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষায় সহযোগিতার পাশাপাশি পরবর্তী বর্ষার প্রস্তুতি হিসেবে বাসস্থান মজবুতকরণের জন্যও অতিরিক্ত অনুদান ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ সরকার ও এই দেশের জনগণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে ইতোমধ্যে মানবতা ও উদারতা প্রদর্শন করেছে। যুক্তরাজ্য ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশের পাশে থাকায় আমি গর্বিত।
বাংলাদেশ সফরে মিস ব্যারোনেস সাগ শরণার্থীদের রেজিস্ট্রেশন সেন্টার পরিদর্শন করেন এবং কিভাবে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শরণার্থীদের স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করবে সেই সম্পর্কে সরাসরি অবহিত হন। শরণার্থীদের রেজিস্ট্রেশন তথ্য-উপাত্তের নির্ভুলতাও নিশ্চিত করে যেন কর্তৃপক্ষ ও মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা শরণার্থীদের প্রয়োজন অভাব-অনটন সম্পর্কে ধারণা পান।
এই সফরে মিস ব্যারোনেস সাগ একটি নারীবান্ধব কেন্দ্রও পরিদর্শন করেন যেখানে নারী ও কন্যাশিশুরা একে অপরকে বিভিন্নভাবে সমর্থন করতে সক্ষম হয় এবং এই নারীবান্ধব কেন্দ্র থেকে তারা ব্যাপক পরিসরে সামাজিক, মানসিক, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, মনো-সামাজিক সহায়তা লাভ করার সুযোগ পেয়ে থাকে। মিস ব্যারোনেস সাগ এর এই সফর রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় যুক্তরাজ্যের অতিরিক্ত ৮৭ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা ঘোষণা করার পরপরই নিশ্চিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের ৮৭ মিলিয়ন পাউন্ডের অতিরিক্ত সহায়তার ২০ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ রয়েছে রোহিঙ্গা সংকটের ফলে কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষের অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর যে প্রভাব পড়ছে তা প্রশমণ তথা কক্সবাজার জেলার উন্নয়নে সহায়তার জন্য।