নাহিদ পারভেজ,কলাপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি।।
দুব্ইা মধ্যপ্রাচ্যসহ দেশের বাইরে থেকে মাদকের চালানের নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে। আর এর অর্থায়ন করা হচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে। বছরে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা মাদকের পিছনে অপচয় হচ্ছে। দেশে পুরোপুরি মাদক নিমূর্ল করা না গেলেও দুস্প্রাপ্য করা সম্ভব। তাই প্রতিটি প্রবেশ মুখে কঠোর অবস্থানে আছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বিগত দুই বছরে আমরা শুধু মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান করিনি, সচেতনও করেছি।
মাদকবিরোধী প্রচারণা অভিযানের অংশ হিসেবে কুয়াাকাটা সমুদ্র সৈকতে র্যাব ফোর্সেস’র আয়োজিত দৌড়াও বাংলাদেশ শিরোনামে ম্যারাথন প্রতিযোগিতার উদ্বোধনে এসব কথা বলেন র্যাব মহাপরিচালক ড. বেনজীর আহমেদ।
দুবাই ভিত্তিক এসব মাদক কারবারীদের হুশিয়ারী করে ড.বেনজীর আহমেদ বলেন, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক হুন্ডি ব্যবসায়ীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা মাদকের সঙ্গে জড়িত। শুধু মাদক ব্যবসায়ী নয়, যারা মাদক ব্যবসায় অর্থের যোগান দেয়, হুন্ডি ব্যবসা করে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
মাদকের ভয়াবহতার উল্লেখ করতে গিয়ে র্যাব মহা পরিচালক বেনজীর অহমেদ বলেন, মাদকাসক্তদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই প্রয়োজন আরো বেশি মাদক নির্মূল কেন্দ্রের। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বহুমখী চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তাদের ছোট্ট একটি অংশ মাদক কারবারিতে জড়িয়ে পড়েছে। তারা সীমান্তের ওপার থেকে মাদক নিয়ে আসে।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা বারোটায় চলো যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে শিরোনামে আয়োজিত র্যাবের এ ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল শ্রেনী-পেশার প্রায় হাজার মানুষ অংশগ্রহন করে। কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে গঙ্গামতি লেক হয়ে ১০ কিলোমিটার দৌড়ে আবার ফিরে আসে অংশগ্রহণকারীসহ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বেনজীর আহমেদ বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশ নিতে হবে। সাংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে জ্ঞানের বিকাশ প্রকাশিত করতে হবে।
উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বেনজীর আহমেদ বলেন, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে জঙ্গীবাদ, মাদক ও দুর্নীতির অভিশাপ থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সকলকে বলবো, কোনো বাহিনীর মধ্যে যেন কেউ মাদক সেবন না করে কিংবা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না থাকে। নিজেদের মধ্যে যদি এ সমস্যা থাকে, তাহলে মাদকের বিরুদ্ধে ঘোষিত যুদ্ধে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। এমন কেউ থাকলে আমাদের অবশ্যই সচেতনভাবে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
র্যাবের দেয়া তথ্য মতে, ২০১৮ সালে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে র্যাব। মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে গোলাগুলিতে এ পর্যন্ত ১৩০ জন নিহত হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে ৩২ হাজার ৭৪৬ জন, ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে এক কোটি ৪০ লাখ ৯৪ হাজার ৬৪৫টি, ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে ২ লাখ, ৪১ হাজার ৪২৩ বোতল এবং হেরোইন ৬৫ কেজি।
মাদকের বিরুদ্খে অভিয়ানের সফলতা করতে উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা অনেক অভিযান পরিচালনা করে মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ সক্ষম হয়েছি। যদিও এতে আত্মতুষ্ট নই। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতার প্রতি বেশি জোর দিচ্ছি। সচেতনতার ফলে মাদকের চাহিদা কমানো গেলে সরবরাহ এমনিতেই কমে আসবে। এক সময় এক পিস ইয়াবা ৫০ টাকায় বিক্রি হতো। কিন্তু মাদকের টার্গেটে দুস্প্রাপ্য করে দেওয়ায় এখন এক পিস ইয়াবা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইয়াবার সিংহভাগ চালান আগে কক্সবাজার দিয়ে আসতো। অভিযানের কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা রুট পরিবর্তন করছে। এখন জেলেরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে নৌকা পরিবর্তন করে ইয়াবা নিয়ে আসে। কুয়াকাটা দিয়ে যেন এ ধরনের চালান না আসতে পারে, তাই এখানকার সব বাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে।