শহিদুল্লাহ সরকার
সাভার থেকে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সাধারন ছাত্র পরিষদ’ নামে গঠিত সংগঠনের নেতার হামলা ও শিক্ষার্থী নির্যাতনের প্রতিবাদে উত্তাল ক্যাম্পাস। ফার্মেসী বিভাগের ৩৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মিন্টু’র উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে নির্যাতন ও মারধর করে রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের ছাত্র রনি আহমেদ।
এর আগের দিন রবিবার ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রনি সাধারণ ছাত্র পরিষদ নামক সংগঠনের সভাপতি বলে জানা গেছে।
বৈধ ভিসির দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদালয়ে সাধারণ ছাত্র পরিষদ নামক সংগঠনটি গড়ে উঠে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কতিপয় কিছু শিক্ষার্থীরা স্বঘোষিত এই সংগঠনের কমিটি তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনিক কিছু কর্মকর্তা এবং সুবিধাবাদীদের সহযোগিতায় সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের মাধ্যে এক বিভ্রান্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করেছে বলে জানান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের নানা কাজে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করতো। তথ্য প্রচারমূলক নানামুখী প্রচারণায় ফেসবুক জনপ্রিয়তা গড়ে তুলে এই চক্রটি।
ফার্মেসী বিভাগের ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাদের কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ না করায় তার উপর রোববার অতর্কিত হামলা চালায় উক্ত সংগঠনের সভাপতি রনি আহমেদ। তার ওপর হামলার খবরে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ছুটে এলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় রনিসহ ছাত্র পরিষদের অন্যান্য সদস্য ও তাদের অনুসারীরা।
রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের সুজন রানা বলেন, আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। কিসের পরিষদ, আমরা কোন পরিষদ বুঝিনা অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তি চাই। সাধারণ ছাত্র পরিষদ এর কোন বৈধতা নাই।
এঘটনাকে কেন্দ্র করে ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে এখন চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এঘটনা ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ফার্মেসীসহ সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পসে আধিপত্য বিস্তার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধনের করার ঘোষণা দেন। এছাড়া ‘সাধারণ ছাত্র পরিষদ নামক’ সংগঠনটির কার্যক্রম নিষিদ্ধে জন্য বিশ্ববিদ্যালেয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এ দিকে ঘটনার সাথে সাধারণ ছাত্র পরিষদের সভাপতির সম্পৃক্ততার ব্যাপারে একই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে আজ একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এটার সঙ্গে দেখলাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি রনি আহম্মেদের নাম এসেছে। এনিয়ে আমরা উপদেষ্টাদের সঙ্গে বসে পুরো ঘটনা জানিয়ে একটা সুষ্ঠু সমাধান করবো।
শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়ে সাধারণ ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা শেখ খোদারনুর রনি বলেন, ‘সাধারণ ছাত্র পরিষদের সভাপতি পরিচয়ে তাকে মারধর করা হয়নি। তাদের নিজস্ব পরিচয় রয়েছে। এখানে সাধারণ ছাত্র পরিষদ টেনে আনার কোনো অর্থই হয় না। তবে মারধরের ঘটনা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বসে বিষয়টি মীমাংসা করব।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর মুর্ত্তজা আলী বলেন, ‘ছাত্র পরিষদ বিচারক নয়। তারা গায়ে হাত তুলবে কেন? তারা প্রশাসনের কাছে লিখিত দিলে এর উপযুক্ত বিচার হবে।’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বহিরাগত কয়েকজন ঐ শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে। আমরা তাকে ভালোভাবে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি। এছাড়া অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।