শ্রিংলা আসছেন আজ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনকেই গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন গতকাল রবিবার বিকেলে ঢাকায় এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, মোদির ঢাকায় আসার তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ১৭ মার্চ সকালে মোদি ঢাকায় পৌঁছাতে পারেন।
এদিকে গতকাল অন্য একটি অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, নরেন্দ্র মোদিকে অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হবে।
অন্যদিকে মোদির আসন্ন সফর এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করতে আজ সোমবার সকালে দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের সফর প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি (হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা) প্রথমে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সফর করছেন। তিনি আগে বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার ছিলেন। সুতরাং বাংলাদেশের ব্যাপারে তাঁর বোঝাপড়া ভালো আছে।’
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমার জানা মতে, তাঁর (শ্রিংলার) সময় দুই দেশের সম্পর্ক সুসংহতকরণের ব্যাপারে বেশ কিছু ভালো কাজও হয়েছিল। সুতরাং তিনি এসে হয়তো এখন বর্তমানে সম্পর্ক কী অবস্থায় আছে, বিভিন্ন চুক্তি ও বোঝাপড়া যেগুলো হয়েছিল সেগুলো এখন কোন পর্যায়ে আছে সেগুলো হয়তো আমরা দ্রুত একটি পর্যালোচনা, আলোচনা করতে পারি।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেই সফরসংক্রান্ত কিছু আলোচনাও করব আশা করছি।’
দিল্লিতে গত সপ্তাহে সহিংসতার পর এ দেশের বিভিন্ন মহল থেকে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর বিরোধিতার বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমরা একটি অনুষ্ঠান করব বড় করে। যেহেতু আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের একটি বিশাল ভূমিকা ছিল, সুতরাং সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চাইব যে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যিনি আছেন তিনিও আমাদের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।’
মোদির আসন্ন সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার বিষয়গুলো জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘মুজিববর্ষের উদ্যাপনকেই আমরা বেশি গুরুত্ব দেব। এরই মধ্যে যেসব প্রকল্প হয়েছে সেগুলো উদ্বোধনের একটি বিষয় থাকতে পারে। কিছু সমঝোতা স্মারক যেগুলো হয়তো তৈরি আছে আমরা সেগুলো সই করতে পারি। এ বিষয়গুলো হয়তো আলোচনার টেবিলে থাকবে। কিন্তু মূল দৃষ্টি থাকবে আমাদের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান।’
দিল্লির সহিংসতায় সরকারের উদ্বেগ আছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমরা দেখছি। আমরা চাইব যে এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে সমাধান বা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করবে।’
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা আজ সকালে ঢাকায় পৌঁছার পরপরই স্থানীয় একটি হোটেলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিবেন। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন। সফর শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার তিনি ঢাকা ছাড়বেন।