রাজধানীর দুই থানার ওসিসহ কর্মকর্তাদের (ওসি) বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে পৃথক আদালতে মামলা হয়েছে। ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলামসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেনসহ ১০ পুলিশের বিরুদ্ধে আনা শ্লীলতাহানির অভিযোগ তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ আনা ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে আজ বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ নালিশি অভিযোগ দায়ের করেন। সংশ্লিষ্ট বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। আনা অভিযোগের সত্যতা জানতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলায় যাত্রাবাড়ী থানার এসআই ওসমান আলী, মো. সোহেল, মো. মিরাজ আলী ও মো. জিহাদকেও আসামি করা হয়েছে। আদালতে বাদীর পক্ষে মামলাটি করেন তার আইনজীবী এস এম মিজানুর রহমান।
অন্যদিকে, শ্লীলতাহানির অভিযোগে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ মামলা দায়ের করা হয়। সংশ্লিষ্ট বিচারক সামসুন্নাহার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।
এ মামলায় দক্ষিণখান থানার ওসি শিকদার মো. শামীম হোসেন, এসআই আবদুল কাদির, আরিফ হোসেন, এএসআই মো. আবদুর রুপ, নুরুল ইসলাম, কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম, জয়েন উদ্দিন, মো. তৌফিক, রুনা আক্তার, ইয়াসমিন আক্তার ও সৎ মা মার্জিয়া আক্তার (পুতুল)।
বাদীর পক্ষে মামলা দায়েরকারী আইনজীবী ইমরুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ মামলায় বলা হয়, বাদীর সাথে তার সৎ মায়ের ছেলে ইকবাল হোসেনের (স্বজল) জমি-জমা নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমা চলছে। সম্প্রতি মার্জিয়া আক্তারকে আদালত কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। জানতে পেরে মার্জিয়া বাদী ও তার পরিবারকে উচ্ছেদের জন্য ফ্ল্যাটে যান।
ওসি শিকদার মো. শামীম হোসেন মামলা জমি সংক্রান্ত মামলা সম্পর্কে অবগত থাকার পরও মার্জিয়ার কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে বাদীর বাসায় দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। ওসি বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বাদীকে লাঞ্ছিত করে।
এসআই আবদুল কাদিরও বাদীকে নির্যাতন করে। ওসি সেখানে উপস্থিত এক সাক্ষীকেও শ্লীলতাহানি করে। বাদী ও সাক্ষীকে তখনই বের হয়ে যেতে বলেন তিনি। বের না হলে তাদের গণধর্ষণের হুমকি দেয়।
বাদীর ১১ বছরের কন্যা এ সময় চিৎকার করলে ওসি ৩ নং সাক্ষীর গালে জোরে থাপ্পড় মেরে রক্তাক্ত করে। বাদীর স্বামী ও ২ নং সাক্ষীর স্বামী মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে থাকাবস্থায় ওসির নির্দেশে অপর সকল পুলিশ সদস্য তাদের মোবাইল কেড়ে নেয় ও তাদের বেদম মারধর করে।
পরে পুলিশ ভ্যানে উঠিয়ে তাদের দিকে বন্দুক তাক করে রাখে। এসময় আসামিরা দুই সাক্ষীকে বিবস্ত্র অবস্থায় টানা হেঁচড়া করে বাসার নীচতলায় নামিয়ে মেইন গেটে তালা দিয়ে বাদী ও সাক্ষীদের বাসা থেকে উচ্ছেদ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। যাওয়ার সময় হুমকি দেয় এই বলে যে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে ওই দুইজনকে ক্রস ফায়ার দিবে। পরে ওসি মার্জিয়াকে দিয়ে বাদী ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে দক্ষিণখান থানায় মামলা করান।