মোঃ বকুল সরকার , স্টাফ রিপোর্টারঃ
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক নগর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সব রকম ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নেয়া হয়ে।
তিনি বলেন, নগর উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।
মানুষের সুবিধার কথা চিন্তা করে আমি ইতিমধ্যেই এই পদক্ষেপসমূহ হাতে নিয়েছি। নগর উন্নয়নে এখন পুরোদমে কাজ চলছে। তাই মানুষের কষ্ট হচ্ছে।
কিন্তু কিছুদিন কষ্ট করলেই সামনে নগরবাসীকে একটি পরিচ্ছন্ন ও যানজটমুক্ত নগর উপহার দিতে পারব। যেখানে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদক মুক্ত একটি নগর গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
বুধবার বিকালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৫ নং ওয়ার্ড এর আওতাধীন বড়তলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ” জনতার মুখোমুখি মেয়র ” অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন হাজী মনিরুজ্জামান মনির কাউন্সিলর ৩৮ নং ওয়ার্ড গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন। অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, আমাদের এই গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন একটি নতুন সিটি কর্পোরেশন। তিনি বলেন, আমার পূর্বে এখানে যিনি মেয়র ছিলেন, তিনি অনেক পদক্ষেপ হাতে নিয়েছিলেন।
কিন্তু সবশেষে সেই পদক্ষেপগুলো অনেকটাই আলোর মুখ দেখেনি।আমি মেয়র হওয়ার পর নির্বাচনের পূর্বে জনগণের কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি।
আশা করি প্রকল্প গুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারলে সিটি কর্পোরেশনে বসবাসরত জনগণের জীবনমান উন্নত হবে এবং প্রতিটি নাগরিক তাদেরকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নাগরিক অধিকার সেবা সমূহ ফিরে পাবে।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনতার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মেয়র।
সিটি কর্পোরেশনে পল্লী বিদ্যুতের অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই পল্লী বিদ্যুতের বিকল্প চিন্তা করা হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই পল্লী বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান হবে।
পল্লী বিদ্যুতের বিল বিষয়ে তিনি বলেন, অতিরিক্ত কোন বিল যদি কারো নিকট থেকে আদায় করা হয় তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব। মহানগরীর জলাবদ্ধতা সম্পর্কে সদর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য শামীম আহমেদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা সৃষ্টির জন্য যারাই দায়ী থাকুক না কেন, তারা যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন, আর যেকোন দলের হোক না কেন এবং তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। মহানগরীর জলাবদ্ধতা বিশেষ করে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কলমেশ্বর ইসলামপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই মানুষের বসতবাড়িতে পানি জমে যায় এবং রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়।যার ফলে এলাকার মানুষের জলাবদ্ধতার কারণে অবর্ণনীয় কষ্ট হয়
উল্লেখ করে শামিম আহমেদ মেয়র মহোদয়ের কাছে এ বিষয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
মহানগরের জলাবদ্ধতার বিষয়ে ইতিমধ্যেই এর জন্য দায়ী তাদেরকে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। নোটিশের জবাব না পেলে সে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। মহানগরের পরিবেশ দূষণ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ইতিমধ্যে মহানগরী ভিতরে যারা শিল্প-কারখানা স্থাপন করবে, তারা যেন পরিবেশের কথা মাথায় রেখে শিল্পকারখানা স্থাপন করে সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পরিবেশ দূষণ করে এখানে কোন শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন প্রতিদিন প্রতিটি নাগরিককে সচেতন হতে হবে। শুধু আইন করে নগরীর পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়।
এর জন্য নগরে বসবাসকারী প্রতিটি নাগরিককে নগর পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। মহানগরীর ভিতরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই রাস্তা সমূহ ৩০ থেকে ৪০ ফিট প্রশস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আর রাস্তা বড় হতে হলে অপরিকল্পিত অধিকাংশ স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলতে হবে। স্থাপনা ভাঙ্গার ফলে মানুষের যে ক্ষতি হবে সে ক্ষতিপূরণ দেওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আসলে সরকারিভাবে কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় না। আমরা সিটি করপোরেশন থেকে আমাদের সাধ্যমত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করব।
জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ মুক্তিযোদ্ধা স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বৃন্দ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের প্রশ্নের উত্তর দেন মেয়র। উল্লেখ্য জনতার মুখোমুখি শিরোনাম অনুষ্ঠানটি সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে অনুষ্ঠানে মেয়র এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম সরাসরি উপস্থিতিকে জনতার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন।