পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পাহাড়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈ-সা-বি শুরু হয়েছে জলে ফুল ভাসিয়ে। তিন দিনের এই উৎসবের প্রথম দিনটিকে বলা হয় ফুল বিজু। নতুন বছরের মঙ্গল কামনায় নদী, ছড়া, লেক, পাহাড়ি ঝরনা ও ঝিরিসহ যেখানেই পানির উৎস আছে, সেখানেই ফুল ভাসিয়ে প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে বিজুকে বরণ করে নেওয়া হয়।
ফুল বিজু মূলত চাকমা সম্প্রদায়ের বর্ষবরণের উৎসব হলেও এবারে তা রূপ নেয় সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধনে সার্বজনীন।
এই উপলক্ষে আজ শুক্রবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পানছড়ির চেংগী নদীর বুক চিরে দৃষ্টিনন্দন রাবার ড্যাম এলাকায় জড়ো হয় হাজারো মানুষ।
নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে বন থেকে সংগ্রহ করা বিজু, রঙ্গন, বেলী, মাধবীলতাসহ নানান বাহারী ফুল কলাপাতায় সাজিয়ে নদীতে ভাসিয়ে গঙ্গা দেবী ও উপগুপ্ত বুদ্ধের পূজা করেন।
ফুল বিজুতে অংশ নেওয়া তর্না চাকমা, মন্টি চাকমা, শোভন চাকমা বলেন, গেল বছরের সব দুঃখ কষ্ট গ্লানি ভুলে গিয়ে আমরা নতুন বছরকে বরণ করে নেব। এ ছাড়া ফুল দিয়ে ঘর সাজিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে পুরনো বছরকে বিদায় জানাই।
ফুল বিজুর মাধ্যমে পাহাড়ের মানুষের মধ্যে ঐক্যের বন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে বলে মনে করেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিতা ত্রিপুরা।
রুমেল মারমা, ক্যাপ্রুচাই মারমা, কনিকা মারমা জানান, এবারের উৎসবটি সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। এমন বর্ণিল আয়োজনটি সত্যিই মুগ্ধ করেছে।
রাবার ড্যামের তলদেশে এবারের নতুন আকর্ষণ ছিল মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী জলকেলি খেলার আয়োজন।
পাশাপাশি চাকমা, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খেলা-ধুলার আয়োজনের পাশাপাশি নাচ, গান ও মোবাইলে সেলফি তোলার ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে সময় কাটাতে দেখা গেছে আবাল-বৃদ্ধ ও বনিতাদের।