ক্রাইম রিপোর্টার, সিলেট :
সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুনামপুরে মছলম উদ্দিন খান একাডেমির প্রধান শিক্ষক মোঃ এনামুল হক দীর্ঘ দিন যাবত ওই শিক্ষা প্রতিষ্টানটিতে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি করে আসছেন এমন অভিযোগ উঠলে কতৃপক্ষ কোন প্রকার ব্যাবস্থা নিচ্ছেন না বলে এমন দাবি এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রীদের অভিবাবকদের।
সিলেটর গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুনামপুর গ্রামে ২০১১ খ্রিস্টাব্দে লন্ডন প্রবাসী রফিক আহমদ খান তার পিতার নামে মছলম উদ্দিন খান একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে মছলম উদ্দিন খান একাডেমি এমপিও ভুক্ত হয়। এমপিও ভুক্তির পূর্ব পর্যন্ত প্রতিষ্ঠাতা একাই একাডেমির সকল ব্যয় সহ শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদান করেন। লেখা পড়ার মান তখন বেশ ভালো ছিলো।
মোঃ এনামুল হক বিগত ৮ এপ্রিল ২০২১ইং মছলম উদ্দিন খান একাডেমির প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। তার যোগদানের পর হতে তিনি নানা ধরণের অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তখন শিক্ষার মান অবনতি হয়। এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ধীরে ধীরে কমতে তাকে।
এক পর্যায়ে উক্ত একাডেমির শিক্ষকরা তার নানা ধরনের অনিয়মের বিষয়ে অবগত হলে তারা এসব অনিয়ম না করার জন্য প্রধান শিক্ষককে বাধা দিলে তাদেরকে চাকরি চলে যাওয়ার হুমকি দামকিও দেন প্রধান শিক্ষক মোঃ এনামুল হক। তার এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির মাত্রা যখন সহকারী শিক্ষকদের নিকট প্রকাশ হয়ে যায় তথন তিনি সহকারী শিক্ষকদেও হেনাস্থা করার জন্য বিভিন্ন প্রকারের কৌশল অবলম্ভন করতে থাকেন। এমনি প্রধান শিক্ষক মোঃ এনামুল হকের নির্যাতনের ব্যাপারে সহকারী শিক্ষকরা উক্ত একাডেমির কমিটির নিকট বললে দফায় দফায় বসে শুরাহা করতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোঃ এনামুল হক তার অনিয়ম ও দুর্নীতির দায় মেনে নিতেই পারছেন না। এক পর্যায়ে তিনি একাডেমির কমিটির সভাপতি সহ সবাইকে হুমকি দিতে শুরু করেন বলে একাডেমির কমিটি পক্ষ থেকে বলা হয়।
এক পর্যায়ে একাডেমির সহকারী শিক্ষক সাকিলা বেগম সুমা ও রাসেদা আক্তার এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ইসলাম উদ্দিন, নিজাম উদ্দিন, জসিম উদ্দিন ও লাকী বেগমের যৌথস্বাক্ষরে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে বিগত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং উপজেলা নির্বাহী অফিসার, গোলাপগঞ্জ সিলেট বরাবর একখানা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তৎকালীন ইউএনও মৌসুমী মান্নান বিগত ২১ মার্চ ২০২৩ইং অভিযোগটি তদন্ত পূর্বক একটি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার মোঃ আব্দুল মোহাইমিন চৌধুরীকে নির্দেশ দেন।
দীর্ঘ তদন্তের পর তিনি বিগত ২৫ মার্চ ২০২৪ইং গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর তদন্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করেন। উক্ত প্রতিবেদনে একাডেমির প্রধান শিক্ষক মোঃ এনামুল হক এর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদনে ওঠে আসে। সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার বর্তমান ইউএনও মিলটন চন্দ্র পাল এর দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদনটি দীর্ঘদিন থেকে পেন্ডিং রয়েছে বলে জানা যায়।
মছলম উদ্দিন খান একাডেমির প্রধান শিক্ষক মোঃ এনামুল হকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভিযোগকারী সহ স্থানীয় অভিবাবক বৃন্দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। অভিযোগকারীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কতৃপক্ষের কাছে জোর দাবী করেও কোন ধরনের সমাধান পচ্ছেন না বলে তাদের অভিযোগ।