
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত 'একান্ত অপরিহার্য কারণ' ছাড়া সরকারি কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ না করার জন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এই কঠোরতা আরোপ করা হলো।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব সাইফুল্লাহ পান্না স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে গত ২১ অক্টোবর এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এই পরিপত্রের একটি অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনা জারির কারণ
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ইতঃপূর্বে জারি করা নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। এমন কিছু অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে:
মন্ত্রণালয়সমূহের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একই সময়ে বৈদেশিক সফরে যাচ্ছেন।
একই মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা একসাথে বিদেশে যাচ্ছেন, যা পূর্বের নির্দেশনার পরিপন্থী।
নতুন নির্দেশনা ও পুরোনো কঠোরতা
নতুন পরিপত্রে বলা হয়েছে, এখন থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত একান্ত অপরিহার্য কারণ ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এর আগে, ডলার সংকট এবং সরকারি ব্যয় সংকোচনের জন্য গত বছরের ৯ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করে বিস্তারিত নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। সেই নির্দেশনায় উল্লেখযোগ্য ছিল:
১. সাধারণভাবে বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হবে। ২. মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ সাধারণভাবে পরিহার করবেন। ৩. সরকারি কর্মকর্তারা একাধারে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করবেন। ৪. কেনা-কাটা, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন বা ফ্যাক্টরি একসেপ্টেন্স টেস্ট-এর ক্ষেত্রে কেবলমাত্র সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ পাঠানোর কথা বিবেচনা করতে হবে। ৫. সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষণ ছুটিতে যাওয়া পরিহার করবেন এবং বিদেশে বিনোদন ভ্রমণ অবশ্যই পরিহার করবেন।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এই নতুন নির্দেশনাটি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারি কার্যক্রমের গতিশীলতা বজায় রাখা এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচন করাই সরকারের মূল লক্ষ্য।