
বগুড়ার এক সাংবাদিকের অভিযোগের ভিত্তিতে নিজেকে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)-এর এডিসি পরিচয়দানকারী এক প্রতারককে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তবে আশ্চর্যের বিষয়, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে বিভ্রান্তিতে পড়ে গোয়েন্দা পুলিশ পরে তদন্তাধীন একটি পুরনো মামলায় ওই প্রতারককে আদালতে প্রেরণ করে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় দৈনিকের বগুড়া প্রতিনিধি ফয়সাল হোসাইন সনির হোয়াটসঅ্যাপে কল আসে। কলকারী নিজেকে সিটিটিসি’র এডিসি ও রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিচয় দেন এবং কৌশলে বগুড়ার বিভিন্ন অপরাধচক্র ও সংবেদনশীল তথ্য জানতে চান।
সন্দেহজনক আচরণে সাংবাদিক সনি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বগুড়া সদর থানার ওসি হাসান বাসিরকে অবহিত করেন এবং জেলা গোয়েন্দা শাখায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
পরদিন শুক্রবার ভোরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ শহরের ঠনঠনিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক ফয়সাল আহম্মেদ (২৯) কে আটক করে। সে বগুড়া সদরের ভাইপাগলা মাজার এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে।
সাংবাদিক ফয়সাল হোসাইন সনি জানান, আমার অভিযোগের ভিত্তিতেই ডিবি পুলিশ প্রতারককে আটক করে। কিন্তু থানায় মামলা করতে গেলে ওসি হাসান বাসির মামলা নেননি। তিনি বলেন, সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে পরে দেখবেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর রাজু কামাল বলেন, সাংবাদিকের অভিযোগের ভিত্তিতে ভুয়া পুলিশ কর্মকর্তা ফয়সাল আহম্মেদকে আটক করা হয়েছে। সে এর আগেও ডিবি পরিচয়ে প্রতারণা করেছে। এজন্য আগের তদন্তাধীন মামলায় (নং-৩০, তারিখ ০৬.০৭.২০২৫) তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলা না নেয়ার বিষয়ে ওসি হাসান বাসির বলেন, “মামলা নেয়া হবে না, এমন কিছু বলিনি। গোয়েন্দা পুলিশ যেহেতু আগের মামলায় কোর্টে পাঠিয়েছে, তাই বলেছি মাসের শেষ বলে দুই একদিন পর মামলা নেব।”
এ বিষয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, “মাসের শেষ বলে মামলা রেকর্ড করা যাবে না—এমন কথা ঠিক নয়। বিষয়টি আমার জানা ছিল না, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে থানায় মামলা গ্রহণ না করায় স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।